আজ ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ বৃহস্পতিবার | ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এখন সময়- রাত ৯:৩১

আজ ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ বৃহস্পতিবার | ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গীবত বা পরনিন্দা

لَّا يُحِبُّ اللَّهُ الْجَهْرَ بِالسُّوءِ مِنَ الْقَوْلِ إِلَّا مَن ظُلِمَ ۚ
“আল্লাহ তা’আলা মন্দবিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। অবশ্য যার উপর জুলুম করা হয়েছে, তার কথা আলাদা। অর্থাৎ, তার উপর যে অত্যাচার করা হয়েছে সেটা সে অপরের নিকট বলতে পারবে। এটা গীবত নয়; বরং জায়েয। (সূরা নিসা-১৪৮)

গীবত অর্থ পরনিন্দা। কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষ-ত্রুটি আলোচনা করা। হতে পারে দোষটি তার মধ্যে আছে। কিন্তু এই আলোচিত দোষটির কথা শুনলে সে নির্ঘাত মনে ব্যথা পাবে। তাহলে এটাই গীবত। (www.iscabd.org)

হাদীস শরীফে এক সাহাবীর কথা এসেছে, যিনি নবীজী ﷺ-কে প্রশ্ন করেছিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! গীবত কাকে বলে? নবীজি ﷺ উত্তরে বলেছিলেন, আপন ভাইয়ের আলোচনা তার পেছনে এমনভাবে করা যা তার নিকট পছন্দনীয় নয়। অর্থাৎ সে পরবর্তীতে যদি জানতে পারে তার সম্পর্কে অমুক মজলিসে এ আলোচনা হয়েছে তাহলে মনে কষ্ট পাবে। এটাই গীবত।
সাহাবী পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, আমি যে দোষ নিয়ে আলোচনা করেছি তা যদি সত্যি সত্যি আমার ভাইয়ের মাঝে থাকে?
নবীজি ﷺ উত্তর দিলেন, আসলেই যদি দোষ থাকে তাহলেই গীবত হবে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার হবে। (আবু দাউদ, বাবলু গীবাত ৪৮৭৪)। (www.icabdlibrary.com)

গীবতকারী নিজের মুখমণ্ডল খামচাবে

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ ‏ لَمَّا عُرِجَ بِي مَرَرْتُ بِقَوْمٍ لَهُمْ أَظْفَارٌ مِنْ نُحَاسٍ يَخْمِشُونَ وُجُوهَهُمْ وَصُدُورَهُمْ فَقُلْتُ مَنْ هَؤُلاَءِ يَا جِبْرِيلُ قَالَ هَؤُلاَءِ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ لُحُومَ النَّاسِ وَيَقَعُونَ فِي أَعْرَاضِهِمْ

সাহাবী হযরত আনাস ইবনে মালিক রাযি. নবীজি ﷺ-এর বিশিষ্ট খাদেম। সুদীর্ঘ দশ বছর নবীজির খেদমত করেছেন। তিনি বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, মিরাজ-রজনীতে যখন আমাকে ঊর্ধ্বজগতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তখন (জাহান্নাম দেখানোর সময়) আমাকে এমন কিছু লোক দেখানো হয়েছিল, যারা নিজেদের নখরাঘাতে মুখমণ্ডল ও বক্ষদেশ থেকে রক্ত ঝরাচ্ছিল‌। আমি জিবরাইল আ.-কে জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? জিবরাইল আ. বললেন, এরা ঐসব লোক যারা মানুষের গোশত খেতো অর্থাৎ গীবত করতো। আর মানুষের ইজ্জত-সম্ভ্রমে আঘাত হানত। (আবু দাউদ ৪৮৭৮) (www.facebook.com/iscabd91)

প্রকাশ্যে গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তির গীবত সম্পর্কে
এক হাদীসে এসেছে। রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لَا غِيبَةَ لِفَاسِقِ ولا مجاهر
অর্থাৎ, ফাসিক ও প্রকাশ্যে গুনাহকারী ব্যক্তির গীবত করলে তা গীবত হিসাবে বিবেচিত হবে না। (জামেউল উসূল, খন্ড ০৮ পৃষ্ঠা ৪৫০)

গীবত থেকে বাঁচার সহজ পদ্ধতি :
হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী রহ. বলেছেন, গীবত থেকে বেঁচে থাকার সহজ পদ্ধতি আছে। তা হল, অপরের আলোচনাই করবে না। ভালো কিংবা মন্দ সব আলোচনা থেকে নিজেকে বিরত রাখবে। কারণ শয়তান খুব ধূর্ত। যখন কারো প্রশংসা শুরু করবে এবং তার গুণ ও উত্তম অভ্যাসগুলো আলোচনা করবে তখন শয়তান তোমার বিরুদ্ধে সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে। কোন ফাঁকে তোমার মগজে ঢুকিয়ে দিবে যে, আমিতো শুধু প্রশংসাই করে যাচ্ছি। তার ওই দোষও তো আছে; ওটা বলি না কেন? তখন তোমার কথার ধরন পাল্টে যাবে। বলবে, অমুক ভালো তবে এই দোষটি তার মধ্যে আছে। এভাবে ‘তবে’ শব্দটিই তোমার সব শেষ করে দিবে। (www.twitter.com/iscabd)

Leave a Comment

লগইন অথবা নিবন্ধন করুন

লগইন
নিবন্ধন