আজ ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ বৃহস্পতিবার | ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এখন সময়- বিকাল ৫:৫৩

আজ ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ বৃহস্পতিবার | ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমীরের আনুগত্য

হাদিসের অনুবাদ : আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. হইতে বর্ণিত, রাসূল রা. বলিয়াছেন, মুসলিম ব্যাক্তির প্রতি তার নেতার পক্ষ হইতে যে নির্দেশনা প্রদত্ত হয়, তা তার পছন্দ হোক আর না হোক; যতক্ষন না অন্যায়ের নির্দেশ প্রদান করা হয়, ততক্ষন তা পালন করা তার জন্য অপরিহার্য দায়িত্ব। তবে কোনো রূপ অন্যায় বিষয়ে অদিষ্ট হলে সে যেন তা পালন না করে।
(আবু দাউদ-২৬১৮) (www.iscabd.org)

রাবী পরিচিতি :
নাম ও পরিচয় : আব্দুল্লাহ, পিতার নাম উমর ইবনুল খাত্তাব। মাতার নাম যায়নাব বিনতে মাযউন। তিনি কুরাইশ বংশোদ্ভূত সাহাবী ছিলেন।
জন্ম ও বংশ- তিনি রাসূল সা. এর নবুয়ত প্রাপ্তির ১ বছর পর ৬০৯ খ্রিষ্টাব্দ পবিত্র মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহন করেন। তার নবম পুরুষ রাসূল সা. এর বংশের সাথে মিলিত হয়েছে।
ইসলাম গ্রহন : তিনি অত্যন্ত ছোট বয়সে পিতার সাথে ইসলাম গ্রহন করেন। তিনি স্বীয় পিতার সাথে মদিনায় হিজরত করেন।
বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহন : তিনি বয়সে অত্যন্ত ছোটো হওয়ায় বদর ও উহুদ যুদ্ধে অংশগ্রহন করতে পারেন নাই। তিনি সর্বপ্রথম খন্দক এবং পরবর্তী সকল যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন।
বর্ণিত হাদিস : তিনি রাসুল সা. হতে সর্বমোট ২৬৩০ টি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তার নিকট হতে অনেকেই হাদিস বর্ণনা করেন। তিনি সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারীদের মধ্যে একজন।
স্বভাব ও চরিত্র : তিনি বহুবিধ গুনের অধিকারী ছিলেন। রাসূল সা. এর সুন্নাহর অনুসরণ, আল্লাহভীতি, বদান্যতা, স্পষ্টবাদি প্রভৃতি গুণে গুণান্বিত ছিলেন। (www.facebook.com/iscabd91)

গ্রন্থ পরিচিতি : সুনানে আবি দাউদ ইসলামের ছয়টি হাদিস গ্রন্থের মধ্যে একটি। যা কুতুবুস সিত্তাহ নামেও পরিচিত। এটি মূলত হাদিসের সংকলনমূলক গ্রন্থ।
তার সম্পূর্ণ নাম “আবু দাউদ সুলাইমান আশ’আস আস সিজিস্তানী। তিনি কখন গ্রন্থ সংকলন করেন তার সু-স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তিনি তার গ্রন্থ প্রণয়ন সম্পন্ন করে তার শায়েখ ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল
রহ. এর খেদমতেপ পেশ করেন। তিনি গ্রন্থখানার উচ্ছসিত প্রশংসা করেন। আর ইমাম আহমদ রহ. ২৪১ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইমাম আবু দাঊদ রহ. ৩৯ বছর বয়সের পূর্বেই সুনান গ্রন্থের সংকল সম্পন্ন করেন।

হাদিসে ব্যাখ্যা : যাবতীয় বৈধ বিষয়ে আমীরের হুকুম মানা ওয়াজিব। অর্থাৎ যেসব হুকুম আল্লাহ ও তার রাসূল সা. দিয়েছেন সেগুলোর ক্ষেত্রে আমীর এর আনুগত্য করতে হবে। এই আনুগত্য আমীরসহ প্রত্যেক ব্যক্তির উপর আবশ্যক। এজন্য আমীরের যে আনুগত্য করার হুকুম দেওয়া হয়েছে তার দুটি দিক রয়েছে- (www.icabdlibrary.com)
একটি হচ্ছে : আমীর যখন কোনো মুবাহ কাজ করার হুকুম দিবেন, তখন জনসাধারনের জন্য সেই মুবাহ কাজ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। তবে বিষয়টি যদি কল্যানের পরিবর্তে অকল্যান বা মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য হয় তাহলে এই হুকুমের আনুগত্য করা ওয়াজিব হবে না।
দ্বিতীয় দিক হচ্ছে : যে বিষয়গুলো ইজতিহাদপূর্ণ, অর্থাৎ যেগুলোর ব্যাপারে ফুকাহায়ে কেরামের মাঝে মতদ্বৈততা আছে- এক মুজতাহিদের মাযহাবে জায়েজ আরেক মাজহাবে নাজায়েজ এসব বিষয়ে আমীর যে দিকে হুকুম দিবেন, সে দিকটি নির্দিষ্ট হয়ে যাবে। অর্থাৎ আমীরের নির্দেশ মতদ্বৈততা নিঃশেষ করে দেয়। কিন্তু এসব কথা তখন প্রযোজ্য হবে যখন আমীরের হুকুম শরীয়ত অনুমদিত এবং সর্বসম্মত বিধানের খেলাফ হবে না। (সূত্র : ইসলাম ও রাজনীতি)

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে, “তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো ও রাসূলের আনুগত্য করো এবং তারও আনুগত্য করো; যে তোমাদের ‘উলিল আমর’ বা কর্মবিধায়ক।
অর্থাৎ, আমাদের ওপর যিনি দায়িত্বশীল তার আনুগত্য করা ফরজ পর্যায়ে বর্ণিত আয়াতে আল্লাহ ও রাসূল সা. এর সাথে যুক্ত করই বলা হয়েছে। তাই নেতা বা দায়িত্বশীল যিনি হবেন, তার আনুগত্য করাও ফরজ।

আনুগত্যের সংজ্ঞা : যথাসময়ে, যথানিয়মে আন্তরিকতার সাথে নির্দেশ পালন করার নাম আনুগত্য। (www.twitter.com/iscabd)

শিক্ষা : আমীরের আদেশ মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে তা দুঃসময়ে হোক আর সুসময়ে হোক। খুশির মুহুর্তে হোক আর অখুশির মুহুর্তে হোক।
আমীরের আনুগত্য ততক্ষন পর্যন্ত করব যতক্ষন তিনি শরীয়তের বিধানের ভিতরে রয়েছে।

তথ্য সুত্র :
সুনানে আবু দাঊদ শরীফ
তাফসিরে ইবনে কাছীর ও তাওহীযুল কোরআন।
হাদিস ও উসূলুল হাদিস (আলিম শ্রেণি)
ইসলাম ও রাজনীতি (আনুগত্য অনুচ্ছেদ)
উইকিপিডিয়া (বাংলা)

Leave a Comment

লগইন অথবা নিবন্ধন করুন

লগইন
নিবন্ধন