দেশ-জাতি-রাষ্ট্র ইত্যাদি পরিভাষাগুলো অনেক সময় বিভ্রান্তিকর। সাধারণভাবে মনে হয় এগুলো অভিন্ন অর্থজ্ঞাপক। সাধারণ মানুষ মনে করে, ‘যাহাই দেশ তাহাই জাতি এবং তাহাই রাষ্ট্র’। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এর অর্থ ভিন্ন ভিন্ন রকম। আমরা যখন দেশ শব্দটি উচ্চারণ করি তখন এটি ভ‚খন্ড নির্দেশ করে। অপরদিকে জাতি বলতে জনসমষ্টিকে বোঝায়। আর রাষ্ট্র ভ‚খন্ড এবং জনসমষ্টি নিয়ে গঠিত। এ তিনটির মিলন মোহনা এক ও অভিন্ন। অনেকটা রাবিন্দ্রীক ভাষায় বলা যায়, ‘এক দেহে হলো লীন’। অবশ্য পৃথিবীর সব দেশে সব কালে এই লীন বা স্থিত হওয়া একসাথে ঘটেনি। সভ্যতার বাঁকে বাঁকে বহতা নদীর মত অনেক অনেক জনপথ অতিক্রম করে অবশেষে সাগরে মিলিত হয়েছে জলরাশি। হাজার বছর ধরে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা অথবা দজলা-ফোরাত অথবা নীল নদের অববাহিকায় জনবসতি গড়েছে মানুষ। জনবসতি থেকে সৃজিত হয়েছে নগর-হরপ্পা, ময়েনজোদারো অথবা এথেন্স বা স্পার্টায়। প্রাচীনে সভ্যতার সুত্রপাত সব দেশে মোটামোটি একসাথে হলেও ইউরোপ তথা গ্রিকের ভাষায় আমাদের শিখতে হচ্ছে রাষ্ট্রের উৎসমূল এবং বিকাশ বিবর্তনের ইতিহাস। তার কারণ গোটা এশিয়া আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকা এক সময় গ্রিক তথা ইউরোপের অধীন ছিল। অধীনেরা যা শেখায় অধিনস্তরা তাই শেখে। তাই পাশ্চাত্য বিক্ষুব্ধ প্রাচ্যের দার্শনিক এডওয়ার্ড সাঈদ তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘অরিয়েন্টালিজম’-এ বলেন ‘তাহারা আমাদের কথা তাহাদের মত করিয়া বলিয়াছে।’
যা হোক, গ্রিক ও রোমান আমলে রাষ্ট্র বলতে ‘পোলিস’, ‘সিভিটাস’ ও ‘রেস পাবলিকা’ ইত্যাদি শব্দগুলো ব্যবহৃত হতে থাকে। একই সময় প্রাচীন বাংলায় এবং ভারতের দাক্ষিনাত্যে প্রজাশাসিত রাজ্যের উদাহরণ পাওয়া যায়। সেই ছোট ছোট নদী বা সাগর তটের জনপদগুলো কিভাবে ‘রাষ্ট্রে’ রূপান্তরিত হলো সে এক বিচিত্র ইতিহাস।
এই বিচিত্র ইতিহাসের একটি মজার বৈশিষ্ট্য হলো, ছোট থেকে বড় আবার বড় থেকে ছোট হয়ে যাওয়া। প্রাচীনে বিভিন্ন সভ্যতার পাদপ্রান্তে যেসব নগর জনপদ গড়ে উঠেছিলো তারা কালক্রমে একে অপরের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হলো। এভাবেই শুরু হলো যুদ্ধ। প্রতিষ্ঠিত হলো এ প্রবাদ : ‘জোর যার মুলুক তার’। আরেকদল মানব ছিলো বেদুইন। তারা এক জনপদ থেকে অন্য জনপদে ঘুরে বেড়াতো। যারা নদী ও সাগর পাড়ে গড়ে তুলেছিলো জনপদ। তারাও প্রথম দিকে এভাবেই ঘুরে বেড়াতো খাদ্য, পানীয় ও সহনীয় পরিবেশের আশায়। যখন একদল মানুষ স্থিত হয়েছে তখনও আরেকদল ঘুরে ঘুরে চলছে। এরা সকলেই ছিলো একই পরিবার থেকে বর্ধিত হয়ে একই গোত্রের লোক। তাই বলা হয় ট্রাইব বা গোত্রই রাষ্ট্রের মূল উৎস। মধ্যযুগের মুসলিম সমাজতত্ত¡বিদ ইবনে খালদুন তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘আল মোকাদ্দিমায়’ আসাবিয়াহ্ বা গোত্রপ্রাধান্যকে সভ্যতার সুতিকাগার বলে বর্ণনা করেছেন। প্রাচত্যের তিনজন দার্শনিক- হবস্, লক ও রুশো রাষ্ট্রের উৎসমূল ব্যাখ্যা করেছেন। তারা বলেছেন আদিতে মানুষ ‘ষ্টেট অব ন্যাচার’ বা প্রকৃতির রাজ্যে বসবাস করতো। তারা কেবলই ঝগড়া-ঝাটি ও মারামারি করতো। এক সময় তারা নিজেরাই অনুভব করলো যে তাদের গোত্র বা জনপদকে সুশৃক্সখল করবার জন্য শাসনব্যবস্থা প্রয়োজন। তারা একত্রিত হয়ে একটি সামাজিক চুক্তিতে উপনিত হলো। গোত্রের একজন নেতা নির্বাচন করলো। তার সাথে চুক্তি হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সে গোত্রের উপর কর্তৃত্ব করবে। এটাই হলো আধুনিক নির্বাচন ব্যবস্থার আদিস্তর। অবশ্য চুক্তির নিয়ম রীতি নিয়ে ঐ তিনজন মনীষীর তিন রকম মত রয়েছে। একদল মনীষী মনে করেন পরিবার থেকে গোত্র, গোত্র থেকে জনপদ, জনপদ থেকে রাষ্ট- এভাবেই বিবর্তনময় পথে রাষ্ট্র জন্মলাভ করেছে। অন্যেরা মনে করেন আল্লাহই রাষ্ট্রের অবয়ব দান করেছেন। এসব তত্ত¡ ও তথ্যগুলোকে একত্র করলে রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে কয়েকটি মতামতের সন্ধান পাওয়া যায়। ক. বিধাতার সৃষ্টি মতবাদ খ. শক্তিপ্রয়োগ মতবাদ গ. গোত্র মতবাদ ঘ. সামাজিক চুক্তি মতবাদ ঙ. বিবর্তনময় মতবাদ।
এ মতবাদগুলো সবটিই সত্য। সবগুলো মতবাদ একত্র করলে একটা সমšি^ত ধারণা পাওয়া যাবে। আমরা জীববিজ্ঞানে বিবর্তন মতবাদের কথা পড়েছি। সেখানে একটা কথা খুব জোরেসোড়ে বলা হয়েছে আর তা হলো- সারভাইবাল অব দ্যা ফিটেষ্ট বা শক্তিই বেচেঁ থাকার সূত্র। আমরা দেখেছি যে, ছোট ছোট নগর রাষ্ট্র নিয়ে বিজয়ী নগর রাষ্ট্র ‘রাজ্য’ গড়ে তুলেছে। যেমন খ্রিস্টপূর্ব ৪৩১সালে শক্তিশালী গ্রিক নগর রাষ্ট্র স্পার্টা-এথেন্সসহ অন্যান্য নগর রাষ্ট্রকে পরাজিত করে স্পার্টা রাজ্য গড়ে তোলে। কালক্রমে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে এভাবেই অসংখ্য ছোট ছোট রাজ্যের উদ্ভব হয়। এসব ছোট ছোট রাষ্ট্রগুলো একই ধারায় একে অন্যকে পরাজিত করে রাজ্য + রাজ্য = সা¤্রাজ্য গড়ে তোলে। এসব সা¤্রাজ্যের মধ্যে রয়েছে রোমান সা¤্রাজ্য, পারস্য সা¤্রাজ্য, ফরাসি সা¤্রাজ্য, রুশ সা¤্রাজ্য, উমাইয়া সা¤্রাজ্য, আব্বাসীয় সা¤্রাজ্য, মোগল সা¤্রাজ্য, বৃটিশ সা¤্রাজ্য এবং উসমানীয় সা¤্রাজ্য। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায় বিভিন্নভাবে এসব সা¤্রাজ্যের উত্থান পতন ঘটে। সে আর এক ইতিহাস। ইউরোপে সা¤্রাজ্যের বিকাশ যেমন সকলের আগে ঘটে তেমনি সা¤্রাজ্যের পতনও সেখানেই ঘটে। ইউরোপীয় সা¤্রাজ্যগুলোর মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী রক্তপাত চলতে থাকে। একটানা ৩০ বছর যুদ্ধ করার পর ক্লান্ত শ্লান্ত এসব সাম্রাজ্যসমুহ অবশেষে একটি চুক্তিতে উপনীত হয়। ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির ওয়েস্টোফেলিয়ায় এই ঐতিহাসিক চুক্তি ¯^াক্ষরিত হয়। আধুনিক নেশন ষ্টেট বা জাতি রাষ্ট্রের সূচনা এ চুক্তি থেকে। এর তাৎপর্য হলো এই যে ইতিপূর্বে শক্তির মাধ্যমে রাজ্যসীমা নির্ধারিত হয়েছে। এই চুক্তির দ্বারা জনগনের ভাষা, ধর্ম, গোত্র এবং ভৌগলিক বাস্তবতাকে ¯^ীকার করে এই প্রথমবারের মত একটি যৌক্তিক সীমারেখা নির্ধারনের চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিহাসের ছাত্র মাত্রই জানে যে ঐ চুক্তির উপর ইউরোপ বিশ^স্ত থাকেনি। সেখানে ১৯১৪-১৯১৯ সাল পর্যন্ত প্রথম মহাযুদ্ধ এবং ১৯৩৯-১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এখানে একটি তাৎপর্যপুর্ণ বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। ওয়েস্টোফেলিয়া চুক্তির মাধ্যমে যেসব যৌক্তিক অঞ্চল ও জনগন নিয়ে রাষ্ট্রটি গঠিত হয়েছিলো সেগুলো ছিলো মূলত রাজতন্ত্র। প্রজাসাধারণের কোন ভুমিকা সেখানে ছিলো না। ইউরোপে শিল্প বিপ্লব, বাণিজ্য বিস্তার, শিক্ষার প্রসারে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। নাগরিক সাধারণ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজতন্ত্র/সা¤্রাজ্যতন্ত্র/অভিজাত তন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়। এসব আন্দোলন সংগ্রাম ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হলেও তার মূল চেতনা ছিলো সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন। এভাবে বৃটেনের ১৬৮৮ সালের গৌরবময় বিপ্লব, ১৭৮৯ সালের ফরাসী বিপ্লব এবং অবশেষে ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় বলশেভিক বা সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব জাতি রাষ্ট্রের অগ্রগতির পথে এক একটি মাইল ফলক। প্রথম ও দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ পৃথিবীর জাতিরাষ্ট্র বিকাশে আর একটি ¯^র্ণোজ্জল অধ্যায়ের সৃষ্টি করে। প্রথম মহাযুদ্ধ অবসানে জার্মান, অষ্ট্রো-হাঙ্গেরী এবং তুর্কি ওসমানীয় সা¤্রাজ্য বিপর্যস্ত হয়। ফলে ইউরোপে জাতি রাষ্ট্রের গঠন পুনর্গঠনে নতুন মাত্রা পরিলক্ষিত হয়। ওসমানী সা¤্রাজ্যের পতনের পর এশিয়া আফ্রিকায় যে জাতি রাষ্ট্রের ¯^াভাবিক বিকাশ হওয়ার কথা তা হয়নি। প্রথম মহাযুদ্ধ জয়ী ইউরোপীয় পরাশক্তি ওসমানীয় সা¤্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত এশিয়া আফ্রিকার বিপুল অঞ্চল ছলেবলে দখল করে নেয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পতন পর্যন্ত এসব জাতি রাষ্ট্রের ¯^াধীনতার জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
এশিয়া আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকায় দ্বিতীয় মহাযুদ্ধোত্তর কালে জাতি রাষ্ট্রের উদ্ভবের ক্ষেত্রে রীতিমত বিপ্লব সূচিত হয়। যুদ্ধের ফলে ইউরোপীয় সা¤্রাজ্যবাদদুর্বল হয়ে পড়ে। তারা তাদের উপনিবেশসমুহে কর্তৃত্ব বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়। এসব অঞ্চলে প্রবল ¯^াধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়। এসব ¯^াধীনতাকামী জাতিসমুহের প্রতি প্রথম দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন জ্ঞাপন করে। ইন্দোনেশিয়া ডাসদের কর্তৃত্বমুক্ত হয়। বৃটিশরা ভারত ছেড়ে যায়। সেখানে পাকিস্তান ও হিন্দুস্তান নামে নতুন জাতি রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। এভাবে প্রায় সমগ্র পৃথিবী সা¤্রাজ্যবাদ মুক্ত হয়। কিন্তু সদ্য ¯^াধীনতাপ্রাপ্ত জাতি রাষ্ট্রসমুহে নতুন করে অভ্যন্তরিন জাতি রাষ্ট্রের আকাক্সখা সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে একটি সশ¯্র যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে ¯^াধীনতা লাভ করে। ষাটের দশকে নাইজেরিয়া থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় বায়াপ্রা।কঙ্গো গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে দ্বিধাবিভক্ত হয়। জাতি রাষ্ট্রসমুহের এ ধরনের যুদ্ধবিগ্রহ ও অস্থিতিশীলতা দেখে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মায়রন উইনার এদেরকে জাতিরাষ্ট্র অভিদায় অভিশিক্ত করতে দ্বিধাšি^ত হন। তিনি এদেরকে বলেন ‘নেশনস ইন হোপ’ বা আশাšি^ত জাতি। অন্যান্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগন এইসব জাতি রাষ্ট্রসমুহের বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। তারা জাতি রাষ্ট্রসমুহের মৌলিক বৈশিষ্ট্য নির্নয়ের চেষ্টা করেন।
জাতি রাষ্ট্রসমুহের পরিচয় নির্নয় করতে গিয়ে তারা বলেন,‘একটি সার্বভৌম রাষ্ট, একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী অধ্যুসিত হওয়া উচিৎ’। তারা মনে করেন সেই জনগোষ্ঠীকে একটি প্রবল রাজনৈতিক শক্তির প্রমাণ দিতে হবে। এক্ষেত্রে তারা সমার্থক দুটি শব্দ ‘জাতি’ ও ‘রাষ্ট্রের’ ভিন্নতর বিষয়গুলোর তুলে ধরেন। তারা বলেন জাতি রাষ্ট্রকে অবশ্যই অভ্যন্তরিন এবং বৈদেশিক বিষয়ে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রদর্শনে প্রমাণ্য হতে হবে। তারা একটি জাতি রাষ্ট্রের সমগ্র জনগনের গ্রহনযোগ্য একটি সাধারণ সংস্কৃতি, ভাষা, নৃতত্ত¡ এবং একই ইতিহাসের শক্ত ধারক হতে হবে । এভাবে একটি ‘সেন্টিমেন্ট অব ওয়ারনেস’ গড়ে উঠতে হবে। একটি সাধারন পরিচয় গড়ে উঠলেই জাতি রাষ্ট্রের সৃষ্টি সফল হতে পারে। জাতি ও ভৌগলিক অঞ্চলের একাত্ততাই জাতি রাষ্ট্রকে আইনানুগতা প্রদান করে। এসব রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বিশে^র জাতি রাষ্ট্রসমুহের বৈশিষ্ট্যাবলী ব্যাখ্যা করে বলেন যে সত্যিকার অর্থে কোথায়ও আদর্শ জাতি রাষ্ট্রের সন্ধান পাওয়া যাবে না। তবে এরা ¯^ীকার করেন যে এসব জাতি রাষ্ট্রসমুহ ‘নেশন বিল্ডিং’ বা জাতি গঠন কার্যক্রমের মাধ্যমে চুড়ান্ত জাতীয়তা অর্জনের চেষ্টা করছে। ভারতের উদাহরন দিয়ে তারা বলেন, এরা ‘বৈচিত্রের মাধ্যমে ঐক্য’ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। অপরদিকে পাকিস্তান শক্তি প্রয়োগ করে ‘ষ্টেট বিল্ডিং’ বা রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগন জাতি রাষ্ট্রকে সময় ও সমস্যার প্রেক্ষিতে পরিবর্তনশীল বলে ব্যাখ্যা করেন। একবিংশ শতাব্দীতে জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো আন্তর্জাতিকতা যখন তুঙ্গে, আবার তখনই ব্রে·িট, কাতালোনীয়া ও বাক্স বিচ্ছিন্নতাবাদের
ঘঠনা ঘটছে। ইউরোপের অন্যত্রও একই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তৃতীয় বিশে^ এমন জাতি রাষ্ট্র খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে যেখানে অভ্যন্তরিন সংহতির সমস্যা নেই। আর্ন্তজাতিক পর্যবেক্ষকগন বলছেন তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লব, বহুজাতিক বাণিজ্য সংগঠন(এম এন সি), বেসরকারী সংগঠন(এনজীও) এবং বিশ^্যায়ন বর্তমান সময়ে জাতি রাষ্ট্রসমুহকে ক্রমরাশমানভাবে অকার্যকর করে তুলছে। তবে পরিবর্তনশীল বিশে^র উত্থান পতনের সাথে জাতি রাষ্ট্রের বাস্তব কার্যকারিতা নির্ভর করছে। ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী-সুতরাং গ্লোবাল ভিলেজ দর্শনেই হয়তো জাতি রাষ্ট্রের মুক্তি।
লেখক : আবদুল লতিফ মাসুম
I like this website